রাতে রওনা হচ্ছেন খালেদা জিয়া, নেত্রীকে বরণে প্রস্তুত বিএনপি

রাতে রওনা হচ্ছেন খালেদা জিয়া, নেত্রীকে বরণে প্রস্তুত বিএনপি
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সোমবার (৬ মে) লন্ডনের গ্রিনিচ সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিএনপি। ঢাকায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ প্রস্তুত করা হয়েছে তার জন্য।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া ওই একই রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে কাতারের আমির এই বিশেষ বিমান পাঠিয়েছিলেন। এবারও সেই বিশেষ বিমানে করেই মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন তিনি।
এ নিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, উনি (ম্যাডাম) আগামীকাল (মঙ্গলবার) কাতার রয়েল অ্যাম্বুলেন্সের এয়ার ক্রাফটে সকাল ১০টায় ঢাকা এয়ারপোর্টে পৌঁছাবেন। আমরা আশা করছি যে, সময়মতই উনি ঢাকায় পৌঁছাবেন।
তিনি আরও বলেন, তবে আমাদের দলের তরফ থেকে একটা আবেদন আছে যে, দলের নেতা-কর্মীদের… আপনারা জানেন, কালকে এসএসসির পরীক্ষা আছে একটা সাবজেক্টে… যেহেতু ঢাকা বিমান বন্দর থেকে কাকলী পথ দিয়ে ম্যাডাম গুলশানের বাসায় যাবেন। আমি সকলকে অনুরোধ করতে চাই, রাস্তার ওপরে যেন কেউ না দাঁড়ায়। যারা অভ্যর্থনা জানাবেন তারা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে যেন ম্যাডামকে অভ্যর্থনা জানান। দলের নেতা-কর্মীরা যাতে জাতীয় ও বিএনপি পতাকা হাতে নিয়ে ম্যাডামকে অভ্যর্থনা জানাবেন এটা আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।
পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,পুলিশ কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, তারা যেন রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে না দেন। যারা ট্রাফিকের সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের প্রতি।
তিনি বলেন,আমি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছে আবেদন রাখতে চাই, কেউ যেন রাস্তায় না দাঁড়ান, ট্রাফিক বিঘ্নিত না করেন, পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র যেতে যেন বাধার না পড়ে সেই ব্যাপারে সকলকে নজর রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে যথা সাধ্য চেষ্টা করব যাতে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র যেতে কোনো অসুবিধা না হয়।
গুলশানের ৮০ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ‘ফিরোজা’—চারদিক দেয়াল ঘেরা, সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জন্য নির্ধারিত কক্ষ রয়েছে। বর্তমানে পালাক্রমে পুলিশ এবং চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
বাড়ির ভেতরের সব কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সামনের সবুজ আঙিনায় ফুলগাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে পরিবেশ। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ নিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ম্যাডামের বাসা কমপ্লিটলি রেডি। বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা, বাসার আঙিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা কোনো কিছুই বাদ নেই। ম্যাডামের স্বজনরা সব কিছু তদারকি করেছেন। এখন আমরা সবাই ম্যাডামের অপেক্ষায় আছি।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তার দুই পুত্রবধূ—জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।
লন্ডন অবস্থানরত খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, স্থানীয় সময় বিকাল ১৬টা ১০ মিনিটে হিথরো বিমানবন্দর থেকে কাতারের আমিরের দেওয়া রাজকীয় বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ম্যাডাম রওনা হবেন। লন্ডন থেকে ঢাকার যাত্রাপথে দোহায় যাত্রাবিরতি আছে। সিডিউল অনুযায়ী লন্ডন থেকে যাত্রা করে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে স্থানীয় সময় রাত আড়াইটায়।
বেগম খালেদা জিয়া এই মুহুর্তে কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, তিনি আগের চাইতে ভালো আছেন। আমরা আশা করছি, যথাসময়ে ম্যাডাম হিথরো বিমানবন্দরে গিয়ে বিমানে উঠতে পারব। দেশবাসী দোয়া করবেন ম্যাডাম যেন ভালোভাবে দেশে পৌঁছাতে পারেন। ম্যাডামের ছেলে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব নিজে ড্রাইভ করে ম্যাডামকে হিথরো বিমানবন্দরে নিয়ে আসবেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তাঁর ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডনের ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন আছেন।