নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে জনগণ ক্ষমা করবে না: আমির খসরু মাহমুদ

নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে জনগণ ক্ষমা করবে না: আমির খসরু মাহমুদ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনে ছিল না এখন তারাই বলছেন, নির্বাচন না হলেই ভালো। তারা একধরনের সুবিধা নিচ্ছে। কিন্তু জনগণ তাদের এ সুযোগ বেশি দিন দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতা গ্রহণের বৈধতা দেবে না। যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তাদের প্রতি দেশের মানুষের বার্তা স্পষ্ট। তাদের জনগণ ক্ষমা করবে না, এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের কোনো ইচ্ছাও পূরণ হবে না।

বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে  মহান মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের শ্রমিক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ১৬ বছর ধরে লড়াই করছি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। গণতন্ত্রের বাহনই হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়। নির্বাচন ছাড়া জনগণের মালিকানা ফেরানো সম্ভব নয়।’

আমীর খসরু বলেন, ‘যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন, তারা নিজেরাই অনির্বাচিত সরকারের সুবিধাভোগী। তারা এখন নানা শর্ত দিচ্ছে, এই না হলে নির্বাচন হবে না, ওই না হলে নির্বাচন হবে না। এসব বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। কারণ, তারা জানে, সুষ্ঠু নির্বাচনে গেলে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান মুখ থুবড়ে পড়বে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ইদ্রিস মিয়া প্রমুখ

আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপির ৩১ দফা রোডম্যাপে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণমূলক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় যেভাবে শ্রমিক স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’

তিনি বলেন, ‘দেশে এখন নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, পারিশ্রমিক ও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। মালিক ও প্রশাসনের একচেটিয়া অবস্থানে শ্রমিকেরা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তাই সবাইকে এগিয়ে এসে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে সহায়তা করতে হবে। ন্যায্য পাওনা আদায়ের লড়াইয়ে শ্রমিকদের পাশে আছে বিএনপি।’

সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সম্ভাব্য ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের কথাবার্তা প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, ‘যদি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার থাকত, তাহলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হতো, জনগণের মতামত বিবেচনা করা হতো। অথচ এখন এমন সিদ্ধান্ত কে নিচ্ছে, কাদের সঙ্গে বসে নিচ্ছে, তা জাতি জানে না।’

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতিতেই কেবল এই করিডোর সম্ভব, তাও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের শর্তে। তাহলে এখন যারা বাইরে বসে এসব দিচ্ছেন, তারা কীভাবে এত সাহস পাচ্ছেন?’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের অবদান ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন ও রাজনীতি কোনোটিই সম্ভব নয়। যারা এ দেশের শিল্প কারখানা, অবকাঠামো, পরিবহন খাতকে সচল রাখেন, তাদের বাদ দিয়ে দেশের কোনো অগ্রগতি সম্ভব না।’