সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে বলা হয় ফ্যাসিবাদ : ফরহাদ মজহার

প্রথম নিউজ, অনলাইন:কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘সাম্য, মানবিক ন্যায়বিচারসহ তিনটা নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা লড়াই করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসে দিল্লির প্রয়োজনে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিল ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। এগুলো আমাদের দাবি ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এই যে চাপিয়ে দেওয়া, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এক হলে এইটাকে বলে ফ্যাসিবাদ।
এটা হিটলারও বিশ্বাস করত। জার্মান জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। জেনেশুনে ফ্যাসিস্ট সংবিধান আমরা রাখছি। এই জুলাই আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থানের পরও আমরা এই সংবিধান বাতিল করতে পারিনি।
এই দায় আমাদের।’
বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকী আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান : রাষ্ট্র গঠন ও আমাদের দায়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘চাপিয়ে দেওয়া সংবিধান যখন তরুণরা বাতিল চাইল, তখন বলা হলো যারা ৭২ এর সংবিধান বাতিল চায়, তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ মানে না। এই প্রপাগান্ডা আওয়ামী লীগ শুরু করল, শেষ পর্যন্ত বিএনপিও একই সুরে কথা বলতে শুরু করল।
এই প্রজন্ম কখনো ৭১ অস্বীকার করে নাই। বরং তারা ৭১ কে পুনরায় দাখিল করতে চায়, যেটা হরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের গৌরব ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যার নেতৃত্বে ছিলেন জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলছে ৭২ এর সংবিধান বাতিল করা যাবে না।
এরা কি জিয়াউর রহমানের অনুসারী? আমাকে কেউ খারাপভাবে নেবেন না। আমি বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠভাবে পক্ষে থেকেছি। বিএনপির ওপর হামলা-মামলার বিরুদ্ধে থেকেছি। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে জিয়াউর রহমান সাম্য ও ন্যায় বিচারের জন্য।’
কনক রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বক্তব্য দেন কবি ও রাজনৈতিক চিনু কবির, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, ভাববৈঠকির সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রায়হান কবীর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক, ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে, দুপুরে ফরহাদ মজহার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘গণ-অভ্যুত্থানত্তোর আলাপচারিতা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় যোগ দিয়ে বলেন, ‘নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে আবু সাঈদ বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ প্রবেশ করেছে এক অবিনশ্বর জীবনে।’ আবু সাঈদের জীবনদান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দার্শনিক ঘটনা বলে অভিহিত করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা বিশ্বসভায় শক্তিশালী স্থান অর্জন করতে চাই, তাহলে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক উঁচু স্তরে পৌছাতে হবে।’
এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী, রেজিস্ট্রার ড. হারুন-অর রশিদ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. ইলিয়াছ প্রামানিক বক্তব্য দেন।