জাবি’র প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে পেটালো ছাত্রলীগ

ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকার পরেও প্রশাসনের উদাসীনতা লক্ষণীয়।

জাবি’র প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে পেটালো ছাত্রলীগ
জাবি’র প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে পেটালো ছাত্রলীগ

প্রথম নিউজ, জাবি : বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কনসার্টে অবাধে মাদকদ্রবের ছড়াছড়ি, নারী হেনস্তা, বহিরাগত মারধর, ছিনতাই যেন নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র। ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকার পরেও প্রশাসনের উদাসীনতা লক্ষণীয়। তবে সেই উদাসীনতা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগের মামলা গিয়ে পড়েছে এবার প্রশাসনের ওপর। এবার কনসার্ট চলাকালে মঞ্চে উঠে নাচতে না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সিনেট সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা। এ সময় মারামারি থামাতে এলে ছাত্রলীগের সাবেক ২ সভাপতিও মারধরের শিকার হয়েছেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টায় সেলিম আল দ্বীন মুক্তমঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২তম ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

অনুষ্ঠানের মঞ্চে পারফর্ম করছিলেন ‘সোলস ব্যান্ডে’র পার্থ বড়ুয়া। জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন রনি, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক অরবিন্দ ভৌমিক, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সবুজ রায়, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক উৎস দত্ত, সহ-সভাপতি কে এম রহমান জাকারিয়ার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী মারধর করছে বলে অভিযোগ ওঠে। তারা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কনসার্ট চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মীরা মঞ্চে ওঠার চেষ্টা করেন। আয়োজকরা অনুষ্ঠানের স্বার্থে তাদের বাধা দেয়। এ সময় পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে আসা লিটন নামে একজনকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন পরিস্থিতি থামাতে গেলে তাকেও মারধর করে। শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও বাংলাদেশ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ ও সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিনকেও লাঞ্ছিত করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘আমি দেখতে পেলাম অনেকগুলো ছেলে মিলে ‘সোলস ব্যান্ডের লিটনকে মাটিতে ফেলে মারধর করছে। আমি পরিচয় দিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করি। আমার ওপর চড়াও হয়ে আমাকে মারধর করা শুরু করে।’

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি দর্শক সারিতে ছিলাম। হঠাৎ করেই কিছু ছেলে মঞ্চে উঠে মারধর শুরু করে। আমি আর সোহেল ভাইসহ ঘটনা থামাতে গেলে আমাদের কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো চড়াও হয়।’ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাবি সিনেট সদস্য সোহেল পারভেজ বলেন, ‘তারা ব্যান্ড সদস্যকে মারধর করলে আমরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।’ জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘এটা অগ্রহণযোগ্য আচরণ। আমরা ইতিমধ্যে তাদের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছি।’ জাবি প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘আমি ফোনে বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: