ফাতেমাকে নিয়ে গর্বিত এলাকাবাসী

ফাতেমাকে নিয়ে গর্বিত এলাকাবাসী

প্রথম নিউজ, অনলাইন:   ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন শাহ-মাদার গ্রামের রফিজল হকের পাঁচ সন্তানের মধ্যে বড় ফাতেমা বেগম (৪০)। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তান নিয়ে চাকরির খোঁজে ঢাকায় আসেন। এক নিকত্মায়র মাধ্যমে গৃহ পরিচারিকার কাজ মেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে। সেখানে বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত কাজে সাহায্য করতে করতে বিশ্বস্ত কর্মী হয়ে ওঠেন ফাতেমা বেগম।

দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। তখন সঙ্গে স্বেচ্ছায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন ফাতেমা। আবার খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকলেও সেখানেও থেকেছেন ফাতেমা।

শুধু তাই নয়, বেগম ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশাল কার্যালয়ের সামনে আটকে দেওয়া হয়েছিল।
তখনো পতাকা হাতে বেগম জিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাতেমা। গত চার মাস আগে বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেলে তার সঙ্গী হন এই ফাতেমা। 

একজন গৃহপরিচায়িকা হয়ে ভালোবাসার অনন্য নজির স্থাপন করায় ফাতেমাকে নিয়ে গর্ববোধ করেন তার দুই সন্তানসহ স্থানীয়রা। ফাতেমা বেগমের জাকিয়া ইসলাম রিয়া (১৯) ও মো.রিফাত (১৬) নামে দুই সন্তান রয়েছে।
তারা নানাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছেন।

ফাতেমার পরিবার জানায়, ২০০৩ সালের শেষের দিকে একই ইউনিয়নের গুড়া মিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. হারুন লাহাড়ির সঙ্গ ফাতেমার বিয়ে হয়। কৃষক হারুন মেঘনা নদীর কোলে জেগে ওঠা চরে চাষাবাদ করে সংসার চলাতেন। এর মধ্যে তাদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় দুই ছেলে-মেয়ে। ভালোই চলছিল তাদের সংসার।
হঠাৎ নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফাতেমার স্বামী হারুন লাহাড়ি। অভাবের সংসারে স্বামীকে যথাযথ চিকিৎসা করাতে পারেননি। পরে ২০০৮ সালের শুরুতে ছেলে রিফাতকে ২ বছর বয়সী রেখে মৃত্যুবরণ করেন ফাতেমার স্বামী। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন ফাতেমা। পরে ২০০৯ সালে কাজের খোঁজে ঢাকায় আসেন ফাতেমা। ওই বছর এক আত্মীর মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবনে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করছেন ফাতেমা। তিনি বেগম জিয়ার সার্বক্ষণিক দেখাশোনাসহ সময়মতো ওষুধ খাওয়ানো ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেগম জিয়াকে স্মরণ করিয়ে দেন। 

খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা থাকায় দুই দফায় হামলা চালিয়ে তার বাবার চায়ের দোকান গুড়িয়ে দেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

ফাতেমার বাবা রফিজল হক বলেন, আমার মেয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে আছেন। আমি অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। মেয়ে খালেদা জিয়ার কাছে আছে এই কারণে সন্ত্রাসীরা আমার দোকানপাট ভেঙে দিয়েছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গৃহপরিচায়িকা হয়ে ভালোবাসার অনন্য নজির স্থাপন করায় ফাতেমাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। জিয়া পরিবারে প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকেই ফাতেমা বেগম তার সবটুকু দিয়ে সেবাযত্ন করে যাচ্ছেন।