ইস্পাত থেকে আসবাব সবই মেলে জাহাজ ভাঙা শিল্পে

২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারত ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, পাকিস্তান ২১ দশমিক ৫ শতাংশ, তুরস্ক ২ দশমিক ৩ ও চীন ২ শতাংশ জাহাজ কেটেছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে আবার শীর্ষস্থান দখল করেছে।

ইস্পাত থেকে আসবাব সবই মেলে জাহাজ ভাঙা শিল্পে
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, চট্টগ্রাম: করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সীতাকুণ্ডের জাহাজ ভাঙা শিল্প। করোনার প্রকোপ কমে আসায় শিল্প এলাকায় বেড়েছে ব্যস্ততা। দেশের স্টিল রি-রোলিং মিলগুলোতেও বেড়েছে এমএস (ম্যানুফেকচারিং স্টিল) রডের উৎপাদন। রডের চাহিদাকে সামনে রেখে জাহাজ ভেঙে পাওয়া স্ক্র্যাপের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া ভাঙা জাহাজের পুরোনো জিনিসপত্র নিয়ে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় গড়ে উঠেছে অন্যরকম ব্যবসা।

সরেজমিন দেখা গেছে- সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে বারআউলিয়া পর্যন্ত উপকূলের ২০ কিলোমিটার জুড়ে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড। সচল ৫৮ ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙা বা কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহাজ ভাঙা শিল্পে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার লোক সরাসরি কর্মরত। পরোক্ষভাবে আরও প্রায় পাঁচ লাখ লোক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি জাহাজ ভাঙার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা হয়। জাহাজের আকারের ওপর নির্ভর করে, কোন জাহাজ কাটতে কত লোক নিয়োগ করা হবে। ছোট স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটতে ৩০০ থেকে ৪০০ শ্রমিক নিয়োগ করলে চলে। বড় স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটতে ১০০০ থেকে ১২০০ শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। 

এদিকে জাহাজ ভেঙে শুধু স্ক্র্যাপ নয় নানা ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। পুরনো জাহাজের আসবাবপত্র থেকে খাট, কিচেন সিংক, বেসিন, বাথটাব থেকে ফুলদানি পর্যন্ত মেলে। এসব জিনিসপত্রের কিছু অংশ রফতানি করা হয়। আবার কিছু অংশ স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এসব ভাঙা জাহাজের পুরোনো জিনিসপত্র নিয়ে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় গড়ে উঠেছে অন্যরকম ব্যবসা। 

ভাটিয়ারি ফৌজদারহাট এলাকায় রাস্তার পাশে ভাঙা জাহাজের জিনিসপত্র কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। বছরে জাহাজের পুরোনো জিনিসপত্রের ব্যবসা কয়েক কোটি টাকার। জাহাজ ভাঙার পর শুধু ব্যবহার উপযোগী জিনিস নয়, বিপজ্জনক পদার্থও পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে আছে অ্যাসবেসটস, ভারী ধাতু, খনিজ তেল, জাহাজের তলা ও ব্যালাস্ট ওয়াটার, পলিসাইক্লিক অ্যারোমাটি হাইড্রোকার্বন, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল, পোড়া তেল ও অর্গানোটিনসহ বেশ কিছু বিপজ্জনক পদার্থ। এ সব পদার্থের কিছু নিয়ম মেনে ডাম্পিং করতে হয়। মালিকরা জানান, ইয়ার্ডেই বিপজ্জনক পদার্থ বিশেষ প্রক্রিয়ায় ডাম্পিং করা হয়। ভবিষ্যতে আরও আধুনিকভাবে সেন্ট্রাল ট্রিটমেন্ট স্টোরেজ ডাম্পিং ফ্যাসিলিটি  অনুসরণ করে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। 
  
সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ জাহাজ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ২৫ বছর বয়স পার হলেই জাহাজগুলোকে স্ক্র্যাপ ঘোষণা করা হয়। এ ধরনের জাহাজ চালানো বিপজ্জনক। সেসব জাহাজই বিক্রি করা হয় বিভিন্ন দেশের আমদানিকারকের কাছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে পুরনো জাহাজগুলো কিনে দেশ বিদেশের বিভিন্ন শিপ ইয়ার্ডে ভাঙা হয়। আমদানিতে প্রতি এক হাজার মেট্রিক টন জাহাজের দাম পড়ে চার কোটি টাকা। ১০ হাজার টন জাহাজের আমদানি মূল্য ৪০ কোটি থেকে ৪২ কোটি টাকা। 

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ২৩২টি পুরোনো জাহাজের আমদানি হয়। আমদানি করা জাহাজের ওজন ২৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ওই পরিমাণ স্ক্র্যাপ পাওয়া যাবে আমদানি করা জাহাজ থেকে। এসব জাহাজের অনেকগুলো ভাঙা শেষ হয়েছে। বাকি জাহাজগুলো ভাঙার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। গড়ে বছরে ২৫০টি জাহাজ আমদানি হয় শিপ ইয়ার্ডে। উত্তর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলজুড়ে বন্ধ ও সচল মিলিয়ে ১৭০টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড আছে। এরমধ্যে সচল আছে ৫৮টি শিপ ইয়ার্ড। বাকি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো নানা কারণে বন্ধ রয়েছে।
 
যেভাবে শুরু জাহাজ ভাঙা শিল্পের: পাকিস্তান আমলে ষাটের দশকে শিপ ব্রেকিং শিল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। ওই সময় তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের পর একটি গ্রিক জাহাজ ‘এমডি আলপাইন’ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বঙ্গোপসাগরের তীরে আটকা পড়ে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে জাহাজটি ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ‘চিটাগং স্টিল হাউজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান জাহাজটি ভাঙার কাজ শুরু করে। তখন থেকে সীতাকুণ্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্পের কার্যক্রম শুরু হয়।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি জাহাজ ‘আল আব্বাস’ বোমা হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে এটি উদ্ধার করে ফৌজদারহাট সমুদ্র তীরে আনা হয়। ’৭৪ সালে কর্ণফুলী মেটাল ওয়ার্কস লিমিটেড জাহাজটিকে স্ক্র্যাপ হিসেবে কেনে এবং বাংলাদেশে বাণিজ্যিক শিপ ব্রেকিং চালু করে।

আশির দশকে জাহাজ ভাঙার কাজ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। আর এই সময়ই এটি শিল্প হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তারা জাহাজ ভাঙার কাজে বড় পরিসরে বিনিয়োগ শুরু করেন। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত এটি লাভজনক শিল্প হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে। পুরোনো বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্যোক্তাও এখন যুক্ত হয়েছেন এই শিল্পে। দেশে সরকারি এবং বেসরকারি খাতে রডের চাহিদা বেড়েই চলেছে। বছরে দেশে রডের চাহিদা ৫৮ লাখ টন। চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ রড তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপ সরবরাহ হয় শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে। রডের প্রধান কাঁচামাল কেটে ফেলা পুরোনো জাহাজের স্ক্র্যাপ। বিদেশ থেকে বিলেট আমদানি করেও রড উৎপাদন হয়। দেশে রি-রোলিং মিলের সংখ্যা ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩০টি। এর মধ্যে বড় আকারের ৫০টি। বড় আকারের এসব মিলের মধ্যে আবার ৩০টি অটো স্টিল মিল থেকে বেশি রড তৈরি হয়। বাকি রি-রোলিং মিলগুলোর বেশিরভাগই ছোট ও মাঝারি আকারের। চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরেই মিলগুলোর অবস্থান বেশি। দেশের অন্যান্য স্থানেও আছে স্টিল রি-রোলিং মিল। শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টন স্ক্র্যাপ পাওয়া যায়। ৭০ শতাংশের বেশি হচ্ছে ইস্পাত শিল্প বিশেষ করে স্টিল রিরোলিং মিলে সরবরাহ হচ্ছে এসব স্ক্র্যাপ। জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে বছরে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়।  

জাহাজ ভাঙা শিল্পে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান: স্ক্র্যাপের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক হারে জাহাজ ভাঙার কারণে বাংলাদেশ অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে। ইতোপূর্বে বিশ্বের প্রায় ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ জাহাজ কেটে বা ভেঙে বিশ্বে শীর্ষ স্থান দখল করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারত ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, পাকিস্তান ২১ দশমিক ৫ শতাংশ, তুরস্ক ২ দশমিক ৩ ও চীন ২ শতাংশ জাহাজ কেটেছিল। কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারত জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে আবার শীর্ষস্থান দখল করেছে। শিপব্রেকার্সদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, আমাদের ১৬০টি ইয়ার্ড আছে। ৫৮টি ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙা হয়। করোনার ধাক্কা সামলে দিয়ে এখন আবার জাহাজ ভাঙা শিল্প ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ব্যবসাও আবার আগের মতো চাঙা হয়েছে। 

অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে উদ্যোক্তারা চান শিল্পটি আরও চাঙা হোক।  শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড দেশের ইস্পাত চাহিদার ৭০ শতাংশই পূরণ করছে। আমরা সরকারকে প্রতিবছর প্রায় ১২০০ কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছি। কিন্তু বড় রাজস্বের জোগানদার হয়েও তেমন সহযোগিতা পাচ্ছি না।

লাল-কমলা শ্রেণি বিতর্ক: ভারতে জাহাজ ভাঙা শিল্প ‘লাল’ শ্রেণিভুক্ত হলেও বাংলাদেশে কমলা শ্রেণিভুক্ত। অভিযোগ রয়েছে চাপের মুখে পরিবেশ অধিদফতর শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে লাল থেকে কমলা শ্রেণিভুক্ত করেছে। গত ১০ অক্টোবর পরিবেশ অধিদপতরের (ডিওই) এক সভায় জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রেণি কমলাতে (খ) নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডিওইর মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিনের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট দফতরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শ্রেণি পরিবর্তনের আগে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্র্ড স্থাপনে পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট বা ইআইএ করতে হয়। শ্রেণি পরিবর্তনের ফলে এ ধরনের সমীক্ষা করার প্রয়োজন পড়বে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, একটি জাহাজ পুরোনো হওয়া মানে এতে অ্যাসবেসটস, ভারী ধাতু, খনিজ তেল, জাহাজের তলা ও ব্যালাস্ট ওয়াটার, পলিসাইক্লিক অ্যারোমাটি হাইড্রোকার্বন, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল, পোড়া তেল ও অর্গানোটিনসহ বেশকিছু বিপজ্জনক পদার্থ থাকে। এসব পদার্থের সঠিক ব্যবস্থাপনা না হলে তা পরিবেশ এবং মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে লাল শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল। বিএসবিআরএ’র সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম বলেন, জাহাজ ভাঙা শিল্প অনেক আগে থেকেই কমলা শ্রেণিভুক্ত। একটি উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান সহায়ক শিল্প কখনও রেড বা লাল শ্রেণিভুক্ত থাকতে পারে না। কিছু সময়ের জন্য লাল শ্রেণিভুক্ত ছিল। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর বুঝতে পেরে আবার কমলা শ্রেণিভুক্ত করেছে।

ভাঙা জাহাজের জিনিসপত্র নিয়ে জমজমাট ব্যবসা: দামি আসবাবপত্রের মতোই দেখতে। কঠের তৈরি দেশের বাজারে একসেট আসবাবপত্র যেখানে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকে। সেই মানের না হলেও চলনসই এক সেট আসবাবপত্র ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেলে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকায়। জাহাজ ভাঙার পর ইয়ার্ড থেকে কিনে নেওয়া এসব সামগ্রীর বাজারও বেশ জমজমাট। নগরের সিটি গেট থেকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকা পর্যন্ত পুরোনো জাহাজের জিনিসপত্রের দোকান চোখে পড়ে। রাস্তার দু’পাশে সারি সারি এসব দোকানে পাওয়া যায় কেটে ফেলা পুরোনো জাহাজের ব্যবহৃত-অব্যবহৃত ফার্নিচার, ক্রোকারিজ, কিচেন আইটেম, বাথরুম ফিটিংস, টিভি-ফ্রিজ-এসি-কম্পিউটার-ইলেকট্রনিকস, রঙ ও তেল, ইলেকট্রিক তার ও নানা সাইজের ক্যাবল, পাইপ ফিটিংস। বসবাসের বাড়ি থেকে অফিস, দোকান কিংবা রেস্টুরেন্ট সাজানোর সব জিনিসই এখানে পাওয়া যায়।  এসব জিনিসের বিশেষত্ব হল এই জিনিসগুলোর দাম বাজারের প্রায় অর্ধেক এবং তুলনামূলক টেকসই।

দোকানদাররা জানান, তারা এইসব জিনিস শিপইয়ার্ড থেকেই সংগ্রহ করেন। টেন্ডার আহবানের মাধ্যমে জাহাজের মালিক জিনিসগুলো বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। যিনি সর্বোচ্চ দরদাতা তিনি জিনিসগুলো কিনে নেন। আবার কোনও কোনও জাহাজের মালামাল লট আকারে, আবার কোনও জিনিস আলাদাভাবে কিনতে হয়।  বিক্রেতারা মূলত পাইকারি ও খুচরা মূল্যে জিনিসগুলো বিক্রি করেন। সারাদেশেই রয়েছে জাহাজের পুরোনো জিনিসের চাহিদা। হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার পণ্যও এখানাকার দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। জাহাজের জিনিসগুলো ব্যবহারের পরিমাণ, স্থায়ীত্ব, চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বিক্রি হয়। দর কষাকষি করে ক্রেতারা এখান থেকে জিনিস ক্রয় করেন। 

ভাটিয়ারীতে অবস্থিত ফার্নিচার দোকান জিলানী ট্রেডিং করপোরেশনের মালিক মোহাম্মদ খাইরুল আজম জসীম বলেন, অনেক জায়গা থেকে ক্রেতারা এখানে আসেন। আমাদের এখানে হাজার টাকা থেকে লাখ টাকার উপরে ফার্নিচার আছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী এখান থেকে আসবাবপত্র কিনে নিয়ে যান। আমাদের এখানে জাহাজের সোফা, বক্স খাট, টি টেবিল, রিডিং টেবিল, ড্রেসিং টেবিল, ওয়ারড্রব, আলমারি, বুক-সেলফসহ ঘর সাজানোর সব ফার্নিচার পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে রেস্টুরেন্টের জন্য জাহাজের কিচেন আইটেম বিক্রি করে একতা এন্টারপ্রাইজ। সীতাকুন্ডের মাদাম বিবির হাটে এই দোকানের মালিক মো. আলাউদ্দিন বলেন, একটা রেস্টুরেন্ট ও বেকারি তৈরির জন্য যা যা জিনিস-পত্র প্রয়োজন তার সম্পূর্ণ সেট-আপ আমাদের কাছে আছে। রেস্টুরেন্টের জিনিসগুলো দামী হয়। তবে ক্রেতারা বাজারে যে দামে কেনেন, আমাদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধেক দামে কিনতে পারেন। পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে প্রায় ২০ লাখের বেশি টাকার জিনিস পাওয়া যায়। ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী দেশের ভেতরে আমরা এক বছরের সার্ভিস ওয়্যারেন্টি দিয়ে থাকি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom