আদানি নিয়ে দৃশ্যত বিচলিত মোদি, আক্রমণের তীর কংগ্রেসের দিকে

মোদি-আদানি হায় হায় ধ্বনির মধ্যে মোদিকে ভাষণ শেষ করতে হয়।

আদানি নিয়ে দৃশ্যত বিচলিত মোদি, আক্রমণের তীর কংগ্রেসের দিকে
আদানি নিয়ে দৃশ্যত বিচলিত মোদি, আক্রমণের তীর কংগ্রেসের দিকে

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : পরপর দু’দিন লোকসভা এবং রাজ্যসভাতেও আদানিদের পতন প্রসঙ্গে নীরব থাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তার শরীরী ভাষা বলে দিলো- গৌতম আদানির সঙ্গে তার সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে বিরোধীরা, বিশেষ করে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী যে অভিযোগ তুলেছেন তাতে অস্বস্তিতে আছেন ভারতের এক নম্বর ব্যক্তিটি।

নরেন্দ্র মোদি দুদে রাজনীতিক। তিনি বিলক্ষণ জানেন যে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে এই আদানি প্রসঙ্গ বিরোধীদের, বিশেষ করে কংগ্রেসের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। তাই তিনি সুকৌশলে আদানিদের নাম মুখে না এনে বন্দুকের নলটি ঘুরিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের দিকে। রাজ্যসভায় বলেছেন- নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধীর রেজিম ভারতকে ছয় দশক পিছিয়ে দিয়েছে। ইন্দিরা গান্ধী যে রাজ্য সরকার ফেলে দিয়ে রাজনীতির রথ চালাতেন তার উল্লেখ করে মোদি বলেন, ৩৫৬ ধারাকে পঞ্চাশবার ব্যবহার করেছেন ইন্দিরা গান্ধী।

কংগ্রেসের ইউপিএ সরকার যে ১০ বছরের শাসনে কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি উপহার দিয়েছে তার উল্লেখ করেন মোদি। মোদি-আদানি হায় হায় ধ্বনির মধ্যে মোদিকে ভাষণ শেষ করতে হয়। কিন্তু, কেন কংগ্রেসকে আঘাত? মোদি জানেন, আদানির সঙ্গে তার সম্পর্ক স্ক্যানারে পড়লে এই তথ্য দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, তিনি ক্ষমতায় আসার পরই গুজরাটের এই ব্যবসায়ীর ব্যবসা ১৫০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, ২০১৯-এর নির্বাচনী সফর তিনি সেরেছেন আদানিদের বিমানে। যদিও আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি বলেছেন, মোদি পাই-পয়সা বিমান ভাড়া মিটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ঢাকাই কুট্টিদের ভাষা অনুযায়ী এই কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে।

তা ঘোড়া হাসুক আর না হাসুক, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে মোদির সম্পর্কের রসায়নের জেরেই রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক, জাতীয় বিমা সংস্থা কিংবা মিউচুয়াল ফান্ডের বিপুল পরিমাণ লগ্নি যে টেনেছেন আদানি তা বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না। মোদির একটি সুবিধা হয়েছে যে, আদানি প্রসঙ্গে সরাসরি বলতে পারছেন না বিরোধীদের মধ্যে অন্যতম অগ্রগণ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু দেউচা পাচামি, তাজপুরের গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে আদানিদের লগ্নি আছে তাই খুল্লামখুল্লা আদানি-মোদির রসায়ন নিয়ে কিছু বলতে পারছেন না মমতা।

বরং তিনি বন্দুকের নল মোদির মতোই তাক করেছেন বিজেপিকে। বলেছেন, এই বিজেপি সরকার এলআইসি, ব্যাংক, পোস্টঅফিস তুলে দেবে। অর্থাৎ মোদির পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন মমতা। কিন্তু মোদি কিংবা মমতা জানেন যে, জনতার দরবারে এবার ভোট ভিক্ষা করতে গেলেই আদানি প্রসঙ্গ উঠবে। মমতার থেকেও সংকট বেশি মোদির। কারণ, বাঘের পিঠে সওয়ার হয়েছেন মোদি। এখন না পারছেন বাঘকে গিলতে, না পারছেন উগড়ে ফেলতে। এই পিচটি বড়ই খারাপ। বাউন্সার ডাক করা বড়ই কঠিন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: