ফরাক্কা বাঁধ পরিদর্শনে গেলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

গঙ্গা-পদ্মা পানি চুক্তি

ফরাক্কা বাঁধ পরিদর্শনে গেলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল

প্রথম নিউজ, অনলাইন: গঙ্গা-পদ্মা পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং নদী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশের ১১ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল ৫ দিনের সফরে সোমবার কলকাতায় এসেছেন। যৌথ নদী কমিশনের তত্ত্বাবধানে বিশেষজ্ঞ কমিটির ৮৬তম বৈঠকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা  সোমবার দুপুরেই কলকাতা থেকে ফরাক্কা বাঁধ পরিদর্শনে সেখানে গিয়েছেন। যৌথ নদী কমিশনে বাংলাদেশের অন্যতম সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রতিনিধিদলে কারিগরী বিশেষজ্ঞরা ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ফারাক্কা বাঁধ পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যৌথভাবে ভারতের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। জানা গিয়েছে, দু'দেশের বিশেষজ্ঞরা পর্যায়ক্রমিকভাবে ভারতে গঙ্গার ওপর ফারাক্কা বাঁধের পয়েন্টে ও বাংলাদেশে পদ্মার ওপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ও অন্যান্য বিষয় যৌথভাবে সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন। 

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ অভিযোগ করেছে যে, শুষ্ক মৌসুমে ফরাক্কা বাঁধ থেকে তারা পর্যাপ্ত পানি পায় না। অন্য দিকে, ভারতীয় পক্ষের দাবি, পানি প্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণে কিছু সময় পানির পরিমাণ কমবেশি হয়। এই সফর ও বৈঠকে সেই বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। 

গঙ্গা-পদ্মা পানি চুক্তি ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া এবং বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই হিসেবে ৩০ বছর মেয়াদি সেই চুক্তির পুনর্নবীকরণ হওয়ার কথা আগামী বছরের মধ্যে। গত বছরের জুন মাসে দুই দেশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল যে, চুক্তি পুননবীকরনের প্রাথমিক পরযায়ে কারিগরী বিশেষজ্ঞ কমিটি আলোচনা শুরু করবেন। ফারাক্কা পরিদর্শন করে আসার পর আগামী ৬-৭ মার্চ কলকাতায় দুই দিনের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক হবে। 

অভিন্ন, সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী এবং আন্তঃ সীমান্ত নদীগুলি নিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশন ১৯৭২ সালে একটি দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া হিসাবে গঠিত হয়েছিল।

তবে গঙ্গা পানি চুক্তি পুনর্নবীকরণে রাজ্য সরকারকে বাদ দিয়ে একতরফা আলোচনার বিরোধীতায় সরব পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় মমতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি লিখে তিনি দাবি করেছিলেন যে ফারাক্কা পানি চুক্তি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি বণ্টনের নীতিমালা বর্ণনা করে এবং পশ্চিমবঙ্গের জনগণের জীবিকা নির্বাহের জন্য এর বিশাল প্রভাব রয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে যে পানি প্রবাহিত হয় তা কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।