থমথমে হবিগঞ্জ, গউছসহ দুই হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা
বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র জি কে গউছসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫শ’ থেকে ২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করা হয়েছে।

প্রথম নিউজ, হবিগঞ্জ : খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে গত বুধবার হবিগঞ্জে আয়োজিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র জি কে গউছসহ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১৫শ’ থেকে ২ হাজার বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করা হয়েছে। গতকাল বিকালে এস আই নাজমুল হাসান বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট বিভাগের সকল উপজেলায় আজ এবং সকল জেলায় আগামীকাল প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বিএনপির শান্তিপূর্ণ সভায় পুলিশের হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সমবায় সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ জানান, সমাবেশের জন্য আমরা পৌরসভার মাঠ বরাদ্দ চেয়েছিলাম, দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমাদের নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে সভায় আসছিল। কিন্তু আওয়ামী পুলিশ লীগ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর নির্বচারে গুলি চালিয়েছে। হবিগঞ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১২শ’ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সংঘর্ষে ঢাকায় চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু ৩ ছাত্রদল নেতার অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয়। তিনি বলেন, গতকালের ঘটনায় শুনেছি আমিসহ আমাদের ২ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। তবে এতে আমরা ভীত নই। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা আগেও হয়েছে। আগামীতে আন্দোলন বেগবান হলে আরও মামলা দিয়ে আমাদের দমানোর চেষ্টা করা হবে। তবে যত মামলা-হামলাই হোক জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী আন্দোলন করে এ জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটবে ইনশাল্লাহ।
হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার শিমুল জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তবে নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করবে না পুলিশ। যারা পুলিশের উপর হামলা করেছে ও নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হবে। উল্ল্যেখ্য, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সমাবেশের আয়োজন করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়। সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জয়নাল আবেদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার শিপা এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকার কথা। দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা হবিগঞ্জে এসে সভায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে বেলা ২টার কিছু পূর্বে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে রওয়ানা হয়। এ সময় শায়েস্তানগর পয়েন্টে তাদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে থানা মোড়, পৌরসভা সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: