তেলের দাম কমেছে ব্যারেলে ২ ডলারের বেশি

এসব চাপের মুখে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম একদিনের ব্যবধানে ২ ডলারেরও বেশি কমেছে।

তেলের দাম কমেছে ব্যারেলে ২ ডলারের বেশি
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ ডেস্ক: চীন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। কিন্তু কভিড-১৯ ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রবাহে দেশটিতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার কোনো আশাই দেখা যাচ্ছে না। তার ওপর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুনাফার হার আরো বৃদ্ধির উদ্বেগ তো রয়েছে। এসব চাপের মুখে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম একদিনের ব্যবধানে ২ ডলারেরও বেশি কমেছে। খবর রয়টার্স।

তথ্য বলছে, কয়েক দিন আগেও করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিল চীন। কিন্তু আবারো দেশটিতে সংক্রমণ বাড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। বেইজিংয়ের সবচেয়ে ঘনবসতি জেলা চাওইয়াং সম্প্রতি তিন ধাপে গণপরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে। উদ্দেশ্য ভয়াবহ সংক্রমণ চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধ করা।

অন্যদিকে, গত শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে মার্কিন মূল্যস্ফীতির সরকারি নথি। ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি মুদ্রাবাজারের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুনাফার হার আরো বাড়ানো হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল আইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জ ইউরোপে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ৩৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ১১৯ ডলার ৬৭ সেন্টে।

অন্যদিকে, নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ৩৬ সেন্ট বা ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ১১৮ ডলার ৩১ সেন্টে। অয়েল ব্রোকার পিভিএমের টমাস ভারগা বলেন, বেইজিংয়ে কভিড ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের বাজার নিম্নমুখী চাপে পড়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে সহসাই পণ্যটির চাহিদায় পুনরুদ্ধার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরের শুরুতে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর প্রভাব কমতে শুরু করলে ঘুরে দাঁড়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা। একের পর এক চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয় বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠানগুলো। ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যায়। এতে আকাশচুম্বী চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকুচিত হওয়ার উদ্বেগ দেখা দেয়। ফলে এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। মার্চে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলার স্পর্শ করে, যা ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে উভয় বাজার আদর্শের গড় দাম ১ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।

এদিকে, সরবরাহ এখনো সংকুচিত। রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক ও এর জোট প্রতি মাসেই উত্তোলন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ। কারণ জোটটির অনেক দেশেই উত্তোলন সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে। লিবিয়ায় উত্তোলন খুব বাজেভাবে কমেছে। এছাড়া পশ্চিমা দেশগুলোর অব্যাহত নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার উত্তোলনও ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে।

অন্যদিকে, ওপেক প্লাসের টেকনিক্যাল প্যানেল সম্প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস কমিয়েছে। এনার্জি ইন্টেলিজেন্স রিপোর্টের পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। জোটটির বাজার পর্যালোচনা প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ৩৪ লাখ ব্যারেল করে বাড়বে। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় চাহিদার পরিমাণ দৈনিক দুই লাখ ব্যারেল করে কমানো হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom