ইসির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এমপি হারুনের
সংসদে আইনমন্ত্রীর উত্থাপিত ‘নির্বাচন কমিশন গঠন আইন’ এদেশের মানুষের প্রত্যাশা এবং রাজনৈতিক দলসমূহ ও সুধীসমাজের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন উর রশিদ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সংসদে আইনমন্ত্রীর উত্থাপিত ‘নির্বাচন কমিশন গঠন আইন’ এদেশের মানুষের প্রত্যাশা এবং রাজনৈতিক দলসমূহ ও সুধীসমাজের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন উর রশিদ।তিনি বলেছেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রোববার জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশন বিলের উপর পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এমপি হারুন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু মাননীয় স্পিকার, আজকে মাননীয় আইনমন্ত্রী যে বিলটি উত্থাপন করেছেন তা নিয়ে সংসদের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করো বলা হয়েছে ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে বলতে চাই, এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে বিগত যে দুটি নির্বাচন - কমিশন হুদা ও রকিব কমিশন গঠন করা হয়েছে তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে এতোটা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে যা নজিরবিহীন। আপনার মাধ্যমে আইনমন্ত্রীকে স্পষ্ট মনে করিয়ে দিতে চাই, আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০০৬ সালে যখন বাংলাদেশে কে এম হাসানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও সরকার সংস্কার ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না। ১৯৯৫-৯৬ সালে দীর্ঘ ১৭২ দিন হরতালের মধ্য দিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া আমরা কোনো নির্বাচনে যাবো না।’
তিনি আরো বলেন, মাননীয় স্পিকার আপনার কাছে অনুরোধ করবো - আগামী ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস ও দুর্নীতির যেসব অভিযোগ রয়েছে সেসব বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই জরুরী।
বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি মাননীয় আইনমন্ত্রীকে সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধানে ১১৮ অনুচ্ছেদে বিষয়টি দৃষ্টিপাত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশে একটি একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সেখানে নিয়োগ দিবেন। ১১৮-এর ৫-এ বলা আছে, ‘সংসদ কর্তৃক প্রণীত যেকোনো বিধানাবলী রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ হইবে সেরূপ হইবে।’
বিএনপির এই সংসদ সদস্য আরো বলেন, ‘এই সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের সকল কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করা নির্বাহী বিভাগের কর্তব্য। কিন্তু কর্তব্য পালন না করলে কি করা হবে বলা নেই। সুতরাং এ বিষয়গুলো আজকে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যে আইনটি করা হচ্ছে তাতে সন্নিবেশিত থাকা জরুরি। দেশের সকল রাজনৈতিক দলের দাবি হচ্ছে - অন্তত পক্ষে এই বিতর্কসমূহ থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসতে পারি।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: