পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত

পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের পণ্যের জন্য ট্রানজিট এবং তৃতীয় কোনো দেশের বন্দর ব্যবহার করে পাকিস্তানি পণ্য আমদানিও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত সরকার। সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পর প্রায় যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিল।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বল হয়েছে, পাকিস্তানে উৎপন্ন অথবা পাকিস্তান থেকে রপ্তানিকৃত সকল পণ্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি কিংবা ট্রানজিট (দেশের পথ ব্যবহার করে অন্য দেশের রপ্তানি) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হল। জাতীয় নিরাপত্তা ও জননীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। এই নিষেধাজ্ঞা অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে। কেবলমাত্র ভারত সরকারের সরকারের বিশেষ অনুমোদনের প্রেক্ষিতে এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটতে পারে।’
সরকারি সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, পাকিস্তানের পণ্যবাহী যেসব জাহাজ বা অন্য পরিবহন এখনো গন্তব্যে পৌঁছায়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, এগুলো আর ভারতের কোনো বন্দরে মাল খালাস করতে পারবে না।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের একমাত্র স্থলপথ পাঞ্জাবের ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত। পেহেলগামে হামলার পর এই পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার সমুদ্র ও আকাশপথেও সব ধরনের আমদানিও বন্ধ হলো।
পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রধানত ওষুধ, ফল ও তৈলবীজ আমদানি করা হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমদানি অনেকটাই কমে যায়। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই আমদানির পরিমাণ প্রায় নগণ্য ছিল। সরকারি প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪-২৫ সালে ভারতের মোট আমদানির শূন্য দশমিক ০০০০১ শতাংশের কম ছিল পাকিস্তান থেকে আমদানি।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের বাইসারান উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় নেপালি পর্যটক ও স্থানীয় পনিচালকসহ অন্তত ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র আছে বলে ভারত অভিযোগ করলেও দেশটি তা অস্বীকার করেছে। তবে এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক কেবলই খারাপ হয়েছে।
পেহেলগামে হামলার পরপরই ভারত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ১৯৬০ সালের গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান লাগাতার সীমান্ত সন্ত্রাস চালাচ্ছে। ভারত এবার সিন্ধু নদের পানি পাকিস্তানকে দেওয়া বন্ধ বা ঘুরিয়ে দিতে পারে। এটি পাকিস্তানের পানি সরবরাহের প্রধান উৎস। এর ফলে কয়েক কোটি পাকিস্তানি নাগরিক প্রভাবিত হতে পারেন।
এর পর পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ভিসা বাতিল করেছে ভারত। এর মধ্যে মেডিকেল ভিসায় আসা ব্যক্তিরাও ছিলেন। জবাবে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, এমনকি সিমলা চুক্তিও বাতিল করার হুমকি দিয়েছে। দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কও অবনমিত করেছে।