সরকারের কাছে তিন দাবি হেফাজতের
অবিলম্বে কারাবন্দি সকল আলেম উলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বুধবার রাজধানীর খিলগাঁস্থ মাখরাজুল উম্মাহ মাদরাসায় এক দোয়া ও আলোচনা সভায় এ আহবান জানান সংগঠটির নেতারা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: অবিলম্বে কারাবন্দি সকল আলেম উলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বুধবার রাজধানীর খিলগাঁস্থ মাখরাজুল উম্মাহ মাদরাসায় এক দোয়া ও আলোচনা সভায় এ আহবান জানান সংগঠটির নেতারা। এ সময় সরকারের হেফাজতের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- ১. আল্লাহ, রাসূল সা., কুরআন, সুন্নাহ তথা- ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাস করতে হবে। ২. কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। ৩. কারাবন্দী সকল আলেম-উলামা ও তৌহিদী জনতাকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম ও অবদান শীর্ষক এ আলোচনা সভা ও দু’আ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে এদিন সকাল নয়টায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানকে পূর্ণ মহাসচিব এবং মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরীকে যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়। অসুস্থতার কারণে সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি হেফাজত আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
তবে তিনি লিখিত বক্তব্য প্রেরণ করেন। আমীরের লিখিত পড়ে শুনান প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. ইসলাম বিরোধী সকল প্রকার ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে সদা লড়াকু সৈনিক ছিলেন। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সা. এর সর্বোচ্চ সম্মান ‘খতমে নবুওয়ত' রক্ষা করার জন্য কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে তিনি আমৃত্যু আন্দোলন করে গেছেন। তিনি ছিলেন বাঙ্গালী জাতীর জন্য একজন দক্ষ রাহবার ও অভিভাবক। আজ তাকে হারিয়ে দেশ ও জাতির অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। হেফাজত মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, শাইখুল ইসলাম রহ. হেফাজতকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংগঠন হিসেবে। তিনি বারবার বলে গেছেন হেফাজতের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। এমনকি কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও নেই। আমরাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, হেফাজত এখনো শাইখুল ইসলাম রহ, আল্লামা বাবুনগরী রহ. ও আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. এর পথ অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং আগামীতে সেই পথেই থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের নামে দেশে যে অশ্লীলতা ও অপসাংস্কৃতির প্রচলন করা হচ্ছে, তা মুসলমানদের ঈমান আক্বিদা বিরোধী। যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে মেনে নেয়া যায়না। তাদের অনিয়ন্ত্রিত পটকা ও আতশবাজি ফোটানো এবং ফানুস উড়ানোর কারণে জন সাধারণের জান মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের অপসংস্কৃতির চর্চা যেন আর না হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে নজর রাখার জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা শাহ্ আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনির প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী'র সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- হেফাজতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা আবদুল আওয়াল, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, জামিয়া ইউনুসিয়ার মুহতামিম মাওলানা মুবারক উল্লাহ, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাখজানুল উলুমের মুহতামিম মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল কাইউম সুবহানী, মাওলানা মির ইদ্রিস, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা উমর ফারুক, মাওলানা ইউনুস ঢালি, মাওলানা গোলাম মাওলা, মাওলানা খালেদ বিন নূর প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: