জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে সরকার বিচ্ছিন্ন : রিজভী
সরকার দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন লাঠি ও গুলিকেই আশ্রয়স্থল মনে করছে

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন লাঠি ও গুলিকেই আশ্রয়স্থল মনে করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সঙবাদ সম্মেলনেতিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত সমাবেশের অংশ হিসেবে আজ ২২ ডিসেম্বর ৬টি জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হবিগঞ্জে সমাবেশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে পুলিশকে অবহিতপত্র দেয়ার পর আজ বেলা ১২টায় শায়েস্তানগর দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পরপরই পুলিশ বিনা উস্কানিতে সমাবেশে হামলা চালায় এবং প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করে। উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক, যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। ১২ টার দিকে সভা শুরুর পরপরই পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক, ছাত্রদল হবিগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রিঙ্গন, যুবদল জেলা সাধারণ সম্পাদক জালাল, ছাত্রদল জেলা সদস্য সাইদুর রহমান, বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট শরীফ, ছাত্রদল জেলা সদস্য আরশাদ, জেলা যুবদল যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান সিতু, ছাত্রদল জেলা যুগ্ম সম্পাদক আবদুল আহাদ তুষার, মৎস্যজীবী দল নেতা মোবারক হোসেন, শিপন আহমেদ, শাহজাহান, জাহির আলীসহ তিন শতাধিক বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে রিঙ্গনসহ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন লাঠি ও গুলিকেই আশ্রয়স্থল মনে করছে। আওয়ামী নাৎসীবাদ এখন চরম আকার ধারণ করে রক্তের ঘ্রাণ নিতেই তৎপরতা দেখাচ্ছে। গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের মাধ্যমে এরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সহিংস সন্ত্রাসের চর্চা করছে। পুলিশকে বানিয়েছে সরকারী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মরণঘাতি হাতিয়ার। মানুষের সমাবেশ দেখলেই এরা মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম। গণতন্ত্রে স্বীকৃত মিছিল-সমাবেশ দেখলেই এরা পুলিশকে লেলিয়ে দেয়। এরা জনগণের ভোটকে বিতাড়িত করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সংস্কৃতি চালু করেছে গায়ের জোরে। এরা নিজেরা তো নির্বাচিত নয়ই, এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী এই বছর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার হিড়িক চলছে। এরা ক্রমাগতভাবে ভাব-ভাষা, প্রতিবাদ, সমালোচনা তথা প্রকৃত গণতন্ত্রকে উপহাস করে জমিদারী শাসন জারি রেখেছে। আর এই জমিদারী শাসন জারি রাখতেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করে বিরোধী দলসহ ভিন্নমতাবলম্বীদের রক্ত ঝরাচ্ছে। বর্তমানে আইন-আদালত প্রাঙ্গন যেন আওয়ামী লীগের একেকটি কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ হামলা ও গুলির পর চলবে গ্রেফতার, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার হিড়িক।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, হবিগঞ্জে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশী হামলা ও গুলিবর্ষণ বর্বরোচিত, কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক। বন্দুকের জোরে ক্ষমতাসীনরা অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে এই হামলা চালিয়েছে। আমি পুলিশী এই হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: