শত কোটি টাকার মালিক জামালপুরের আ. লীগ নেতা বাবুল, গ্রেপ্তার না হওয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ

শত কোটি টাকার মালিক জামালপুরের আ. লীগ নেতা বাবুল, গ্রেপ্তার না হওয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ

প্রথম নিউজ, জামালপুর: জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন বাবুল জোরপূর্বক সাধারণ মানুষের জমি দখল, ঠিকাদারি কাজে অনিয়ম দুর্নীতি করে গত ১৯ বছর ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিজ নামে, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের নামে জামালপুর-ঢাকায় শত শত কোটি টাকা এবং বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি ও অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যান। আট মাসেও তাকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোহরাব হোসেন বাবুলকে আটক করতে না পারায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে।। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ।

জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের সুলতানা খালি গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদের ছেলে সোহরাব হোসেন বাবুল। তিনি স্কুলে পড়াশোনাকালে তার মা মারা যায়। পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ অবস্থায় বাবুলকে তার মামা সালাম খান জামালপুর শহরের দেউরপাড় চন্দ্রা গ্রামে নিয়ে আসেন। এখানে বাবুল পড়াশুনা শেষ করে তার মামাতো বোনকে বিয়ে করেন। এরপর প্রথমেই চাল ব্যবসা করে স্বৈরাচার হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে জাতীয় পার্টির আমলে শহরের ১২নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন। স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে ৯১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনে মির্জা আজম এমপি নির্বাচিত হন। সোহরাব হোসেন বাবুল সে সময় মির্জা আজম, দিদার পাশা ও ফারুক আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। সোহরাব হোসেন বাবুল বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে ২০২২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ পেয়ে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার শুরু করেন।

ক্ষমতার প্রভাবে সোহরাব হোসেন বাবুল অনিয়ম, দুর্নীতি, জোরপূর্বক জমি দখল, ঠিকাদারি, ভূমি ব্যবসা, অ্যাপার্টমেন্ট, এগ্রো ফিশারিজ ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকা, বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি ও অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে পতন হলে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সোহরাব হোসেন বাবুলের নামে সদর থানায় মামলা হওয়ায় তিনি পলাতক রয়েছেন।

সোহরাব হোসেন বাবুলের জামালপুর শহরের বকুলতলায় ২টি বিলাসবহুল বাসা, আমলা পাড়ায় মুক্তি টাওয়ার নামে ১০তলা বাসা, দুরমুঠ গ্রামের বাড়িতে দু’তলা বাসা, ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১নং দুরমুঠ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস, কোটি টাকা ব্যয়ে মা-বাবার নামে মাদ্রাসা ছাড়াও ডাকায় বাবুলের নিজ নামে, স্ত্রী, ছেলে মেয়ের নামে ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন জানান, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে ও ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গণহত্যা শুরু করে, যা ৫ই আগস্ট পর্যন্ত চলতে থাকে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও শীর্ষ নেতারা পলাতক রয়েছে।

যারা বিগত দিনে ভোট ডাকাতি করেছে, মানুষের উপর অন্যায় নির্যাতন করেছে, জোরপূর্বক মানুষের জমি দখল করেছে এখন পর্যন্ত জামালপুরের প্রশাসন তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমরা দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। ব্রেকিং নিউজ ডট কম ডট বিডিসহ  বিভিন্ন গণম্যাধমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তবুও তারা আটক হচ্ছে না। আমরা প্রশাসনকে  তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।