রপ্তানি পণ্যের আড়ালে ৩৮২ কোটি টাকা পাচার

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

রপ্তানি পণ্যের আড়ালে ৩৮২ কোটি টাকা পাচার
রপ্তানি পণ্যের আড়ালে ৩৮২ কোটি টাকা পাচার

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চারটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি অনুমতিপত্র জালিয়াতি করে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে ৩৮২ কোটি টাকা পাচার করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি করা পণ্য থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আর দেশে ফেরেনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বলছে, ওই চারটি প্রতিষ্ঠান হলো সাবিহা সাইকি ফ্যাশন, এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন, ইমু ট্রেডিং করপোরেশন ও ইলহাম ট্রেডিং করপোরেশন। এসব প্রতিষ্ঠান টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট, হুডিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়ায় রপ্তানি করেছে।

শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক বলেন, রপ্তানি দলিল জালিয়াতি করে বিদেশে পণ্য রপ্তানির অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত ৩১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায় অভিযান চালিয়ে সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে ৭টি ৪০ ফিট কনটেইনারে রক্ষিত ৯টি পণ্য চালান পরীক্ষা করে ঘোষণা বহির্ভূত একাধিক পণ্য পাওয়া যায়। রপ্তানিকারকের ঘোষণা অনুযায়ী, টি–শার্ট ও লেডিস ড্রেস রপ্তানির কথা। কিন্তু পাওয়া গেছে বেবি ড্রেস, জিনস প্যান্ট, লেগিংস, শার্ট, শালসহ ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য। পরে শুল্ক গোয়েন্দার চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালককে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্তে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, সাবিহা সাইকি ফ্যাশন বিভিন্ন সময়ে ৮৬টি পণ্য চালান রপ্তানি করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি করা পণ্যের বিনিময় মূল্য ১৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ কোটি টাকা। পণ্যের চালানগুলোর নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তারা যে রপ্তানির অনুমতিপত্র (ইএক্সপি) দিয়েছিল, সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে। একটি অনুমতিপত্র একাধিক রপ্তানির চালানে ব্যবহারের সুযোগ নেই। ফলে এসব ইএক্সপির কার্যকারিতা নেই। এতে বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই।

মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, তদন্তে সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের পাশাপাশি আরও তিনটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান একই ধরনের জালিয়াতি করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। চারটি প্রতিষ্ঠান একই কৌশলে ১ হাজার ৭৮০টি পণ্য চালানে এমন জালিয়াতি করেছে। এসব চালানের বিপরীতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১৮ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন পণ্য, যার ঘোষিত মূল্য ৩৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাবিহা সাইকি ফ্যাশন ২১ কোটি টাকা, এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন ২৮২ কোটি টাকা, ইমু ট্রেডিং করপোরেশন ৬২ কোটি টাকা ও ইলহাম করপোরেশন ১৭ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে।

 Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: