মেঘনায় মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছে ৫২ হাজার জেলে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: নিষেধাজ্ঞার ২ মাস পর লক্ষ্মীপুরের রায়পুরসহ চার উপজেলার মেঘনা নদীতে মাছ শিকারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। তাই জাল ও নৌকাসহ সব ধরনের কাজ সেরে নিতে মাছঘাটগুলোতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
তবে অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এবার মাছের উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ২৮ হাজার ৫শ মে.টন। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার মে.টন বেশি।
জেলা ও উপজেলার মৎস্য অফিসগুলোর সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে ৪৩ হাজার জেলে নিবন্ধিত রয়েছে। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।
জাটকা সংরক্ষণও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস নদীতে সকল ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এসময় ৩ শতাধিক মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়। ১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার মধ্যরাতে। এরপর থেকে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। তাই মাছ শিকারের জন্য জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাল ও নৌকাসহ সব ধরনের কাজ সেরে নিতে ৩০টি মাছঘাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত করণ ও মজুদকরণ নিষিদ্ধ ছিলো। এসময় প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি হারে ভিজিএফের চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়।
এখন পর্যন্ত অনেক জেলে বরাদ্ধকৃত চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন। জেলেরা জানান, প্রতিবছর নদীতে অভিযান চলে। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্য এবারের অভিযান সফল হয়। সরকারের আইন মেনে নদীতে যায়নি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সহ ৪ উপজেলার জেলেরা । নিষেধাজ্ঞা ৩০ এপ্রিল মধ্যে রাতে উঠে যাওয়ায় পুরোদমে নদীতে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। তাই নৌকা ও জালসহ অন্যান্য কাজ সেরে নিয়ে নদীতে ইলিশসহ অন্যান্ন মাছ ধরছে। দীর্ঘদিন পর বৃহস্পতিবার ভোরে মাছ ধরতে নদীতে নামছে।
এবারের অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন ও রায়পুর উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। দুই মাসে নদীতে অভিযান হয়েছে প্রায় তিনশ। এসময় বেশ কয়েকজন জেলেকে জেল জরিমানা ও মামলা দায়ের করা হয়েছে। দশ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৫শ মে.টন। গত বছর চেয়ে ৫ হাজার মে.টন বেশি।