বিএনপি’র গণঅবস্থান থেকে নতুন কর্মসূচি আসছে

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গণঅবস্থানে অংশ নেবেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

বিএনপি’র গণঅবস্থান থেকে নতুন কর্মসূচি আসছে
বিএনপি’র গণঅবস্থান থেকে নতুন কর্মসূচি আসছে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি’র গণঅবস্থান কর্মসূচি আজ। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গণঅবস্থানে অংশ নেবেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। একই সময়ে দেশের অন্য ৯টি সাংগঠনিক বিভাগে চলবে এই কর্মসূচি। বিএনপি’র সঙ্গে একই দিনে, একই সময়ে পৃথক পৃথক গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সমমনা দল ও জোটগুলো।

আজকের কর্মসূচি থেকে ঘোষণা হবে যুগপৎ   আন্দোলনের তৃতীয় ধাপের কর্মসূচি। ১০ দফা দাবি এবং রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা নিয়ে চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে রূপ দিতে চায় দল ও জোটগুলো। গণঅবস্থানে বড় জমায়েত নিশ্চিত করতে আগেই সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতিও নিয়েছেন বিএনপি নেতারা। একই সঙ্গে বিভাগীয় শহরে ব্যাপক জনসমাগমের মাধ্যমে আন্দোলনকে গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে পাঠানো হয়েছে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, নয়াপল্টনে গণঅবস্থান সফল করতে ঢাকা বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। এসব নেতারা নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকবেন এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন।

নয়াপল্টনের সামনে আয়োজিত এ গণঅবস্থানে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা যোগদান করবেন। অনুষ্ঠানে সদ্য কারামুক্ত বিএনপি’র মহাসচিব প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। বেলা ৩টার দিকে গণঅবস্থানের সমাপনী বক্তব্যে সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন তিনি।  একই সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে অন্যান্য দল,  জোট ও মঞ্চ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় ১২ দলীয় জোট, পুরানাপল্টন প্রীতম হোটেলের উল্টোদিকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, কাওরান বাজার এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি অফিসের সামনে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের এলডিপি, আরামবাগ দলীয় অফিসের সামনে গণফোরাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বপ্রান্তে বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য জোট গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।

একই সময়ে দল ও জোটের নেতারা যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এদিকে সরকার বিরোধীদলগুলো গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও ১১ই জানুয়ারিকে জামায়াত ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস পালন করবে বলে জানা গেছে। ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস হিসেবে পালন করবে জামায়াত। দলীয় সূত্র জানায়, দিবসটি উপলক্ষে দেশের সকল মহানগরী শাখায় আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি।  ঢাকার বাইরে অন্য ৯টি বিভাগীয় শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল বিকালে তাদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। 

সিলেট বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহীতে ডক্টর আব্দুল মঈন খান, বরিশালে সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু, ফরিদপুরে এডভোকেট আহমেদ আজম খান। এ ছাড়া এর আগে গঠনকৃত সমন্বয় টিমের দলনেতা, সমন্বয়কারী, সমন্বয় সহযোগীসহ বিভাগের অন্তর্গত জেলাসমূহের অধিবাসী কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক, সদস্য, জেলা, উপজেলা ও মহানগরসহ অন্যান্য নেতারা বিভাগীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন, সরকার পতন আন্দোলন আরো বেশি জোরালো করতে বিএনপি’র হাইকামন্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটির শীর্ষ নেতারা। একই দাবি জানিয়েছে সমমনা দল ও জোটের নেতারা। পরবর্তী কর্মসূচি লংমার্চ কিংবা জেলাপর্যায়ে বড় সমাবেশ করার কথাও জানিয়েছেন তারা। 

এ ছাড়া নতুন কর্মসূচির মধ্যে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১৬ই জানুয়ারি ১০ বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ২৬শে জানুয়ারি পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে জোট ও দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি বলে বিএনপি’র নেতারা জানিয়েছেন। ২৫শে জানুয়ারি ‘বাকশাল দিবস’ উপলক্ষে নতুন কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। ওইদিন কালো পতাকা প্রদর্শন, মানববন্ধন কিংবা সমাবেশের কর্মসূচি আসতে পারে।  বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনে সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। দেশের ১০ বিভাগে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করবেন নেতাকর্মীরা। এজন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন বিএনপি’র হাইকমান্ড।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: