প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় ৭ জন

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

প্রথম নিউজ, কুমিল্লা: কুমিল্লার চান্দিনায় সালমা আক্তার (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় পুকুরে। এরপর বাবা সোলাইমান (৪০) দাবি করেন তাকেও একইভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ফাঁসানোর চেষ্টা করেন ভাতিজা এবং ভাতিজি জামাইকে। কিন্তু আদতে পুরো বিষয়টি ছিল সাজানো নাটক। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার পর গলা কেটে মরদেহ ফেলে দেন পুকুরে। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন মোট ৭ জন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার সম্মেলনে কক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তুপুর গ্রামের সোলাইমানের উকিল শ্বশুর আবদুর রহমান বাড়িতে হত্যার পরিকল্পনা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাতে সালমার মা হালিমা বেগমকে মিথ্যা অজুহাতে তার বাবার বাড়িতে পাঠি দেওয়া হয়। পরে গভীর রাতে প্রথমে সালমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করেন বাবা সোলাইমান। পরে ঘরের বেড়া কেটে তাকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর দিন শনিবার (২ অক্টোবর) সকালে পুলিশ সালমার মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওইদিন মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করে সোলাইমান বাদী হয়ে চান্দিনা থানায় ভাতিজা শাহ কামাল, শাহ জালাল ও ভাতিজি জামাই ওযায়েরসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিনজনসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

জানা যায়, ঘটনার তিনদিন পর গত ৪ অক্টোবর সোলাইমান নিজের গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে হত্যাচেষ্টার নাটক সাজিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করে। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে বের হয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক তথ্য। এ ঘটনায় পরিকল্পনাকারী আবদুর রহমান ও খলিল নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দা জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, সোলাইমান কুমেকে ভর্তি থাকায় তাকে এখনো গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তবে সুস্থ হলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। এ ঘটনায় ৪ জন পলাতক রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী আবদুর রহমান ও খলিল ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আফজাল হোসেন, ডিআইওয়ান মনির আহাম্মদ, চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন দত্তসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

গত শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাতে মাদরাসা ছাত্রী সালমা আক্তারের (১৪) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উপজেলার উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom