প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর এখন পর্যন্ত দুই দেশের সেনাদের মধ্যে পাঁচবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এমন অবস্থায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যে দিল্লি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।
চলমান এই শঙ্কার মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানালেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ। ভারত ও পাকিস্তান সত্যিই যুদ্ধে জড়াবে কি না- তার আভাস আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে বোঝা যাবে জানিয়ে পাকিস্তানি নাগরিকদের ‘মানসিকভাবে প্রস্তুত’ থাকার আহ্বানও জানান খাজা আসিফ। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী দু-তিন দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সত্যিই কিছু ঘটে কিংবা শুরু হয়, তাহলে আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে তা হবে। আর যদি এই সময়সীমার মধ্যে কিছু না ঘটে- তাহলে বুঝে নিতে হবে যে একটি বড় বিপদ আমরা এড়াতে পেরেছি।
অন্যদিকে সামা টিভিকে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে একটি যুদ্ধের আশঙ্কা দানা বাঁধছে এবং আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের সবারই এখন মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে এবং আমাদের অস্তিত্বের প্রতি সরাসরি হুমকি থাকলে কেবল তখনই পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করবে।
এর আগে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের ভিসা বাতিল হয়েছে। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত।
পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।