জীবন দিয়ে যাব, নয়তো বেঁচে থাকলে দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো : আমীর খসরু
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধোলাইখালে এক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: স্বৈরাচারী সরকারের দুঃশাসনে মানুষ দিশেহারা। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, গুম-খুন চলছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি আর লুটপাটে চারদিকে হাহাকার চলছে। সরকারে বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে জনগণ।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধোলাইখালে এক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধোলাইখাল কাজী কমিউনিটির সামনে বিএনপি মহানগর দক্ষিণের জোন-৬ ধুতরাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, কোতোয়ালি ও বংশাল থানার উদ্যোগে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। দক্ষিণের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাস্তায় নেমে গেছি ফয়সালা হবে রাজপথে, আমরা কেউ ফিরে যাব না। যেদিন শেখ হাসিনার পতন হবে সেদিন বাড়ি ফিরে যাব। এই যে রাস্তায় নেমেছি হয়তো জীবন দিয়ে যাব, নয়তো বেঁচে থাকলে দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো। জীবন দিয়ে যাব, আমাদের পরিবারদেরকে বলেছি আমাদের জীবনের চিন্তা করবা না। তাদের (আওয়ামী লীগ) হাতে এখন মাত্র একটি অপশন। সেই অপশনটা হচ্ছে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করা। আমাদের মধ্যে কোনো ভয়ভীতি নেই, আমরা ভয়ভীতি পার হয়ে চলে এসেছি। রাস্তায় নেমে গেছি ফয়সালা হবে রাজপথে, আমরা কেউ ফিরে যাব না। কেউ জীবিত যাব না, মৃত্যু যে হচ্ছে আব্দুর রহিম, নুরে আলম ও শাওন তারা মৃত্যুবরণ করেনি, তারা আমাদের সাথে আছে, আমাদের হৃদয়ে রয়েছে, আমাদের আন্দোলনে রয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগেছে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দখলদার স্বৈরাচার, অবৈধ অনির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার শপথ নিয়েছে জনগণ। গুলি আসুক, লাঠি আসুক কেউ পিছনে ফিরে যাব না। সামনের দিকে এগিয়ে যাব এটি হচ্ছে আজকের শপথ। আজকে যারা জনগণের বিপক্ষ নেয়ার চেষ্টা করছেন সেটা আওয়ামী বাহিনীর হোক বা পুলিশ বাহিনী হোক এখান থেকে বেরিয়ে আসার আপনাদের কোনো সুযোগ নেই। দেশের মানুষ সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। যারা বাংলাদেশে আওয়ামী পুলিশ বাহিনীর ভূমিকায় পালন করছেন তাদেরকে পরিষ্কার দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের সুরক্ষা দেয়ার, বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার, বাংলাদেশের মানুষের জীবনের নিশ্চয়তা দেয়ার।
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের আত্মাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে সেই বাংলাদেশকে ফেরত আনতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশিদের চিন্তা করার দরকার নেই বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের চিন্তা পরিষ্কার। এটা একটি চরম দুর্নীতি হয়ে গেছে, এদেশে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই, এদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছু নেই, এদেশে আইনের শাসন নেই, দেশের বাক স্বাধীনতা নেই, এ দেশের জনগণের নিরাপত্তা নেই। এ বিষয়গুলো সারা বিশ্বে পশ্চিমা দেশগুলোতে পরিষ্কার হয়ে গেছে। সেই কারণে পুলিশ প্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা হয়েছে, সে কারণে র্যাব প্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। পুলিশের আক্রমণের প্রতিবাদ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বক্তব্য দিয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিম উদ্দিন আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।