পার্লারের আড়ালে দেহ ব্যবসা, নারীসহ আটক ৩
আটকরা হলেন শাহীন খান (২৮), সেলিনা আক্তার (৩৫) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৩২)।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ঢাকার আশুলিয়ায় পার্লারের আড়ালে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগে দুই নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)। সোমবার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন শাহীন খান (২৮), সেলিনা আক্তার (৩৫) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (৩২)।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল।
মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, একাধিক ভুক্তভোগী র্যাব-৪ এর কাছে শাহীন খানের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফিসহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমলে নিয়ে র্যাবের একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল সোমবার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার ও জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত করার অভিযোগে শাহীন খান, সেলিনা আক্তার ও জান্নাতুল ফেরদৌসকে আটক করে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে শাহীন জানান, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে সেলিনা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। যদিও এই বিয়ের কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। পরে শাহীনের যোগসাজশে সেলিনা আক্তার পার্লার ব্যবসার নামে নারীদের নিয়ে অবৈধভাবে দেহ ব্যবসা করাতেন। পার্লারে মেয়েদের কাজ শেখানোর নাম করে নিয়ে এসে জোরপূর্বক অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করতেন।
তিনি আরও বলেন, সেলিনা আক্তার মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়। ইতোপূর্বে তিনি থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। সম্প্রতি শাহীন খান ও সেলিনা আক্তার উভয়ে যৌথভাবে মাদক কারবারসহ দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। সেলিনা আক্তার নিজকে একজন প্রভাবশালী নারী বলে এলাকায় পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। সেলিনা আক্তার অষ্টম শ্রেণি পাস হলেও নিজেকে একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট বলে প্রচার-প্রচারণা চালান। অন্যদিকে আটক জান্নাতুল ফেরদৌস সাভার ব্যাংক কলোনির নিজ বাসায় শাহীন ও সেলিনা আক্তারের সঙ্গে মিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দেহ ব্যবসা করে আসছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শাহীন খান বিভিন্ন সময়ে নিজের বিভিন্ন ভুয়া পরিচয় প্রদান করেন। কখনো শাহীন ইসলাম জীবন, কখনো শাহীন খান, কখনো মো. শাহীন ইসলাম নামে নিজের পরিচয় দেন। তিনি ভুয়া আইডি কার্ড দেখিয়ে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ও দিতেন। এছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাহীন এন্টারপ্রাইজ; ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উন্নয়ন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচয় দিতেন। তিনি অনেক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ভিডিও ধারণ করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। শাহীনের ব্যক্তিগত মোবাইলে এসবের বহু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়।
আটকদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: