ঢামেক এলাকায় সারারাত ফার্মেসি খোলা, ‘জরুরি’ বলছেন রোগীর স্বজনরাও
ওষুধের দোকানি ও রোগীর স্বজনরা বলছেন, রাত ২টার পর হাসপাতালে রোগী আসে এবং ওষুধের জরুরি প্রয়োজন হয়। সময়মতো ওষুধ না পেলে রোগী বাঁচানো কঠিন হয়ে যেতে পারে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওষুধের দোকান রাত ২টার পর বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে তা মানতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ওষুধের দোকানি ও রোগীর স্বজনরা বলছেন, রাত ২টার পর হাসপাতালে রোগী আসে এবং ওষুধের জরুরি প্রয়োজন হয়। সময়মতো ওষুধ না পেলে রোগী বাঁচানো কঠিন হয়ে যেতে পারে। ফলে বাধ্য হয়ে ফার্মেসি খোলা রাখতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা তারা জানেন না।
আজ শুক্রবার প্রথম প্রহরে রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও নতুন ভবন এলাকায় ১০ থেকে ১৫টি ওষুধের দোকান খোলা। সেগুলোতে বিক্রয়কর্মীরা আছেন। রোগীর স্বজনরাও আসছেন ওষুধ কিনতে। সেখানে চাঁদপুর মেডিসিনের দোকানি মোহাম্মদ লিটন বলেন, সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা আমার জানা নাই। হাসপাতাল যেহেতু ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে, ওষুধও ২৪ ঘণ্টাই লাগে। ফার্মেসি বন্ধ করলে রোগীরা ওষুধ পাবে কোথায়?
মা ওষুধ ঘরের দোকানি তানভীর হোসেন তারেক বলেন, বেচাকেনা কম। রাতে যা হয় সেটাও হবে না। এতে রোগীরা বেশি সমস্যায় পড়বে। ভেতরে তো আর ওষুধের দোকান নাই। শারমিন মেডিসিন কর্নারের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু বলেন, আমরা জানি না। মার্কেট ও সমিতির কেউ বলেনি বন্ধ করতে। পুলিশ কিছু দিন আগে এসে বলেছিল বন্ধ হবে। পরে আর কিছু বলেনি। এদিকে রোগী ও রোগীর লোকেরা ২৪ ঘণ্টাই ওষুধের দোকান খোলা রাখার কথা বলছেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে বাবাকে নিয়ে আসা রুহুল আমিন বলেন, খাবার হলে কিছুক্ষণ পরে খাওয়া যেত কিন্তু ওষুধ তো আর পরে খাওয়া যায় না। যখন দরকার তখনই খেতে হবে। মো. নজরুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আমার স্ত্রীর হঠাৎ সমস্যা। এ কারণে রাতেই ওষুধ কিনতে আসতে হলো। ওষুধের দোকান বন্ধ থাকলে ওষুধ আর কিনতে পারতাম না।
ঢামেকের উল্টোদিকে থাকা একেএস ফার্মেসির বিক্রয়কর্মী সুমন চন্দ্র রায় বলেন, রাতে যারা ওষুধ কিনতে আসে সবগুলোই জরুরি। ওষুধের দোকান বন্ধ থাকলে এই ওষুধগুলো তারা কিনবে কোথা থেকে? গত ২২ আগস্ট দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান কখন বন্ধ থাকবে তা নির্ধারণ করার কথা জানায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত ১৬ জুন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ডিএসসিসি এলাকার সব দোকানপাট, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। এতে ডিএসসিসি এলাকায় শৃঙ্খলা আসবে এবং ঢাকা শহর পরিচালনার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি হবে। সব ধরনের খাবারের দোকান বা রেস্তোরাঁর রান্নাঘর বন্ধ করতে হবে রাত ১০টার মধ্যে। আর খাবার সরবরাহ (পার্সেল) চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত।
এছাড়া চলচ্চিত্র, প্রেক্ষাগৃহসহ চিত্তবিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা রাত ১১টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। সাধারণ ওষুধের দোকান বন্ধ করতে হবে রাত ১২টার মধ্যে। আর হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত নিজস্ব ওষুধের দোকান বন্ধ করতে হবে রাত ২টার মধ্যে। তবে ওষুধের দোকান খোলা রাখা জরুরি হলে তা আবেদনের মাধ্যমে অনুমতি নিতে পারবে।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও হাসপাতাল সংলগ্ন তিনটি ফার্মেসিকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে ডিএসসিসি। সেগুলো হলো- ডিএস ফার্মেসি, অপু এন্টারপ্রাইজ ও খান জাহান আলী ফার্মেসি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews