কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় অচিরেই নিভে গেল আবিরের জীবন প্রদীপ
সোমবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রথম নিউজ, রংপুর: মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন পাইলট উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলার কারণে অকালেই নিভে গেল চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির হাসান আবিদের (১২) জীবন প্রদীপ। সোমবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আবির পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার দানিয়ালের পাড়া গ্রামের রাজা মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়িক উদ্দেশে ঝুঁকিপূর্ণ একটি নির্মাণাধীন ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। ভবনটির দেওয়াল ঘেঁষে ৩৩ কেভি ভোল্টের মিঠাপুকুর সাব-স্টেশনের বিদ্যুৎ সংযোগের তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে অগ্নিদগ্ধ হয় শিক্ষার্থী আবির। ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা শিক্ষা বিভাগ। সংশ্লিষ্টদের এমন উদাসীসতায় নানা প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
তারা বলছেন, ব্যবসায়িক উদ্দেশে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে শিশুদের জীবন নিয়ে খেললেও নীরব সংশ্লিষ্টরা। উলেখ্য, উপজেলার শঠিবাড়ী গোড়বান্দা এলাকায় অবস্থিত ব্যক্তি মালিকানাধীন পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ লাগোয়া ৩৩ কেভি ভোল্টের লাইন চলে গেছে। সেই লাইন সংলগ্ন বিল্ডিং তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত ১৮ অক্টোবর বিকালে স্কুল শেষে কোচিং ক্লাস করার সময় স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবিরসহ দুই শিক্ষার্থী ৩৩ কেভি ভোল্টে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আগুন লেগে যায় আবির হোসেনের শরীরে। এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য অধ্যক্ষ আখলাক হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি প্রতিষ্ঠানে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কোনো অনুমোদন নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থানার এসআই ইমরান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে তার মামা পরিচয়ে একজন স্কুলের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও পরে তিনি তা লিখিত দিয়ে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।