৫০ বছরের মধ্যে জাপানে লাগা সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে

৫০ বছরের মধ্যে জাপানে লাগা সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানে ভয়াবহ দাবানল অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ দাবানলে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামাঞ্চলের আশেপাশের পাহাড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে একজনের মৃত্যু হয় এবং ২১০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ছাড়া ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।

ওফুনাতোর মেয়র কিয়োশি ফুচিগামি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘একটি বিমান জরিপের পর আমরা মূল্যায়ন করেছি যে, আগুন আর ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে না। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’
 
এই আগুন প্রায় ২ হাজার ৯০০ হেক্টর (৭,১৭০ একর) জমিতে ছড়িয়ে পড়েছিল, যা ম্যানহাটনের প্রায় অর্ধেক আয়তনের।
৫০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানের বৃহত্তম দাবানল এটি। হোক্কাইডো দ্বীপে ১৯৭৫ সালে আগুনে পুড়ে যাওয়া ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা গেছে। 
 

রেকর্ড শুষ্ক সময়ের পর বুধবার থেকে শুরু হওয়া আর্দ্র আবহাওয়া অগ্নিনির্বাপণ প্রচেষ্টাকে সহায়তা করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় জাপানে গত বছর রেকর্ড সংখ্যক গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে ওফুনাতোতে মাত্র ২.৫ মিলিমিটার (০.১ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ১৯৬৭ সালের ৪.৪ মিলিমিটারের আগের রেকর্ড ভেঙেছে এবং গড়ে ৪১ মিলিমিটারের চেয়ে অনেক কম।

১৯৭০-এর দশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর থেকে জাপানে দাবানলের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে জাপানে দাবানলের ঘটনা ঘটে, যখন বাতাস শুকিয়ে যায় এবং বাতাসের গতি বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরে প্রায় ১ হাজার ৩০০টি ঘটনা ঘটেছে।

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা দিলেন মার্ক কার্নি। ৫৯ বছর বয়সী কার্নি তার বিজয় ভাষণের বেশিরভাগ অংশে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, যিনি কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি দেশটিকে ৫১তম মার্কিন রাজ্যে পরিণত করতে চান; আমি মনে করি ‘আমেরিকানদের কোনো ভুল করা উচিত নয়’। কারণ হকির মতো বাণিজ্যেও কানাডারই জয় হবে।

রবিবার (৯ মার্চ) রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। পরবর্তী প্রধামন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

আমেরিকা প্রসঙ্গে কার্নি বলেন, নতুন হুমকি এলে তো নতুন ধরনের ভাবনা এবং পরিকল্পনা দরকার হয়। আমরা আরো নির্ভরযোগ্য দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করব।

তিনি বলেন, আমেরিকা তাদের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে কানাডাও পাল্টা কর চাপাবে। আমেরিকানরা যতদিন না আমাদের সম্মান করছে, তত দিন পারস্পরিক শুল্ক থাকবে।

কার্নি বলেন, ট্রাম্প কানাডা দখল করে নিতে চাইছেন। সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া যাবে না। আমেরিকানরা আমাদের পানি, আমাদের জমি, আমাদের যাবতীয় সম্পদ লুটে নিতে চায়। ওরা আমাদের দেশটাকেই চায়। ট্রাম্প কানাডার শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং কানাডার বাণিজ্যকে বারবার আক্রমণ করছেন।
তাকে সফল হতে দেওয়া যাবে না।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর মধ্যস্থতা করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এ লক্ষ্যে সৌদি আরবে ইউক্রেন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করবে মার্কিন প্রশাসন। খবর ভয়েস অব আমেরিকা ও বিবিসির।

খবরে বলা হয়, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিনি সৌদিতেই থাকবেন।
এই সময়ে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে রুবিওর।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডায় জড়ান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওই সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ ঘিরে দুই রাষ্ট্রনেতার তর্ক-বিতর্ক চরমে পৌঁছায়। এতে আলোচনা ভেস্তে যায়।
এক পর্যায়ে হোয়াইট হাউস ছেড়ে চলে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। পরে অবশ্য জেলেনস্কি জানান, ওই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য তিনি ‘অনুতপ্ত’। 

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজিও হন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সৌদিতে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দু’দিন আগেই রাশিয়ার পক্ষে সুর নরম করতে দেখা গেছে ট্রাম্পকে। তার মতে, পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করা ইউক্রেনের চেয়ে অনেক বেশি সহজ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি বিশ্বাস করেন বলেও জানান ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, পুতিন যুদ্ধ থামাতে আগ্রহী। 

মস্কোর বেশ কিছু সূত্র ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছে, ইউক্রেনের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারেন পুতিনও।
তবে এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত চাপাতে পারে মস্কো। রাশিয়ার প্রসঙ্গে আমেরিকার এই নরম মনোভাবের ফলে ইউক্রেনের ওপর যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসার জন্য চাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্বস্তির মাঝেই জেলেনস্কি জানিয়ে দিয়েছেন, সৌদিতে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার জন্য ইউক্রেন মুখিয়ে রয়েছে। 

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রুডো তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। এ হিসেবে মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রবিবার (৯ মার্চ) রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। পরবর্তী প্রধামন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
রবিবার সদস্যদের ভোটে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। এরপর তার উত্তরাধিকার বাছাইয়ের জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল।

উত্তর-পশ্চিম টেরিটরিজে জন্ম নেওয়া এবং আলবার্টা প্রদেশে বেড়ে ওঠা কার্নি নিজেকে রাজনীতির বাইরের একজন হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যিনি অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় কানাডাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন।

কার্নি হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন এবং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসে এক দশকেরও বেশি সময় কাজ করেছেন। তিনি ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, যেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগের প্রচারণা চালিয়েছেন।

২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় তিনি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন এবং তাৎক্ষণিক ও কার্যকর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কানাডাকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন। ২০১৩ সালে তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন।

সে সময় ব্রেক্সিটের ফলে ব্রিটিশ অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন কার্নি, যা ব্রেক্সিটপন্থীদের ক্ষুব্ধ করেছিল।
তবে, অনেক বিশেষজ্ঞ তাকে এমন একজন দক্ষ নীতি নির্ধারক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, যিনি সংকট মোকাবিলায় দক্ষতা দেখিয়েছেন।

অর্থনৈতিক বিষয়ে তার দক্ষতা অস্বীকার করার মতো নয়, তবে নির্বাচনের রাজনীতিতে তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, যা অনেকের উদ্বেগের কারণ। ৫৯ বছর বয়সি কার্নি 'রাজনৈতিক বহিরাগত' হিসেবেই বেশি পরিচিত।

তিনি এর আগে জাস্টিন ট্রুডোর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। তবে, সরাসরি কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। ফলে, নেতৃত্বের দৌড়ে সাধারণ জনগণের কাছে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য তাকে অনেক বেশি প্রচারণা চালাতে হয়েছে।