হাসনাতের সঙ্গে সারজিসের দ্বিমত, জানালেন নতুন তথ্য

হাসনাতের সঙ্গে সারজিসের দ্বিমত, জানালেন নতুন তথ্য

প্রথম নিউজ, অনলাইন : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে যে পোস্ট দিয়েছেন, তাতে কিছুটা দ্বিমত প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছেন এনসিপির আরেক সংগঠক সারজিস আলম। রবিবার (২৩ মার্চ) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে এই পোস্ট দেন তিনি।

সারজিস জানান, ১১ মার্চ সেনাপ্রধানের সঙ্গে তিনি ও হাসনাত বৈঠক করেছিলেন। তাদের সঙ্গে দলের আরও একজন সদস্যের থাকার কথা থাকলেও ব্যক্তিগত কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তারা আলোচনায় অংশ নেন।  
তিনি বলেন, সেনানিবাস থেকে আমাদের ডেকে নেওয়া হয়নি। বরং সেনাপ্রধানের মিলিটারি অ্যাডভাইজারের মাধ্যমে আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বার্তা আদান-প্রদান চলছিল। সেনাপ্রধান যখন ‘এনাফ ইজ এনাফ’ মন্তব্য করেন, তখন আমি তার অ্যাডভাইজারকে জিজ্ঞাসা করি, এর পেছনে কোনো বিশেষ কারণ আছে কি না। পরে সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়।
সারজিস দাবি করেন, হাসনাত সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে ‘প্রস্তাব’ হিসেবে দেখলেও তিনি একে ‘অভিমত প্রকাশ’ হিসেবে দেখছেন। সেদিন সেনাপ্রধান স্ট্রেইট-ফরোয়ার্ড ছিলেন, কিন্তু আলোচনা এতটা এক্সট্রিম ছিল না, যতটা হাসনাতের ফেসবুক পোস্টে উঠে এসেছে। তিনি আরও বলেন, রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ গঠনের বিষয়ে কোনো চাপ দেওয়া হয়নি। বরং সেনাপ্রধান ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন। 
হাসনাত তার স্ট্যাটাসে দাবি করেন, আলোচনার একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘যে দল এখনো ক্ষমা চায়নি, অপরাধ স্বীকার করেনি, তাকে কিভাবে ক্ষমা করা হবে?’ এর জবাবে সেনাপ্রধান ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘তোমরা কিছুই জানো না। তোমাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। আমরা অন্তত ৪০ বছর ধরে এই সার্ভিসে আছি।’  
তবে সারজিস এই দাবি পুরোপুরি খারিজ করেননি। তবে তিনি বলেন, ‘এই কথোপকথন রুমের ভেতরে নয়, বরং বাইরে গাড়িতে ওঠার আগে বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে। আমার মনে হয়নি সেনাপ্রধান রেগে গিয়েছিলেন। বরং একজন সিনিয়র ব্যক্তি জুনিয়রদের অভিজ্ঞতা শেখানোর মতো সুরেই বলেছিলেন।’  
সারজিস মনে করেন, হাসনাত ফেসবুকে যে পদ্ধতিতে বিষয়টি প্রকাশ করেছেন, তা সমীচীন নয়। তিনি বলেন, এ ধরনের সংবেদনশীল আলোচনাগুলো আমাদের দলের ফোরামে আনা উচিত ছিল। পরবর্তীতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে এটি আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমি ‘হাসনাত না ওয়াকার’ ন্যারেটিভ প্রত্যাশা করি না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক মুখোমুখি দাঁড় করানো কখনোই যৌক্তিক নয়। পোস্টের শেষে সারজিস বলেন, যদি কেউ হাসনাতের দিকে বন্দুক তাক করে, তাহলে তার সামনে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি আমাদের রয়েছে। তবে সহযোদ্ধার বক্তব্য সংশোধন করার প্রয়োজন হলে তা করব। তিনি আরও লেখেন, আমাদের রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগের যেকোনো সংস্করণের বাংলাদেশ রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান দৃঢ়। সত্যের জয় হবেই।
এর আগে, শুক্রবার (২১ মার্চ) হাসনাত আবদুল্লাহ এক পোস্টে লেখেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২:৩০। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।